অামাদের সম্পর্কে জানতে নিচের লেখাটি পড়ুন

উম্মাতে মুহম্মাদ - আদর্শে ফুরকান

এটি ইসলামিক সংঘ, যার কাজ মানুষকে ধর্ম সম্পর্কে সচেতন করা এবং বিভিন্ন ধরনের সমাজ সংস্কারমূলক কাজ পরিচালনা করা । বর্তমানে এটি বরিশাল বিভাগের ...

ব্লগ থেকে

Filled Under:

যে কারণে একই সময় রোজা রাখতে পারে না মুসলিম বিশ্ব

সৈয়দ আমজাদ হোসেন : বাংলাদেশসহ বিশ্বের কিছু এলাকায় সৌদি আরবকে অনুসরণ করে রোজা পালন করা হয়দিন দিন এ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে  এ বিষয়টি নতুন ও মুখরোচক হওয়ার কারণে অনুসারীর সংখ্যাও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছেএমনি একটি ইসলামের অ-মৌলিক ইস্যুতে বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্যে একটি জাতীয় বিভক্তি পরিগ্রহ করছে; যা কারোই কাম্য হতে পারে নাএকে তো মুসলমানদের মাঝে ঐক্যের বড়ই অভাবনতুন এ বিষয়টিও সমাজে আরও ফেতনা সৃষ্টি করছে

পবিত্র রমজানুল মুবারকের সিয়াম পালনের জন্য মুসলমানগণ দিনক্ষণ হিসাব করেনএ হিসাব নির্ধারণের জন্য চাঁদকে সময়ের মানদন্ড ধরবে নাকি সূh©¨কে সময়ের মানদন্ড ধরবে এটি হচ্ছে মুখ্য বিষয়যেহেতু বিষয়টি ইসলামের, তাই কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বরচিত কোন বিধান কারো উপর চাপিয়ে দেয়ার অধিকার আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কাউকে দেননিআবহমানকাল থেকে মুসলমানগণ চাঁদ দেখে তাদের যাবতীয় ধর্মীয় কার্ক্রম পরিচালনা করে আসছেকিন্তু হঠাৎ করে কোন কারণে প্রশ্ন দেখা দিল যে, মুসলমানগণ চাঁদ দেখে দিনক্ষণ হিসাব করবে নাকি সূ দেখে ক্যালকুলেশন করে আগে থেকে নির্ধারিত সময়ে রোজা পালন করবে, না সৌদি আরবের সাথে মিলিয়ে রোজা পালন করবে? এ নিয়ে বিভিন্ন প্রকার জটিলতা বিরাজ করছেআসুন এই জটিলতার জট খুলতে একটু পh©¨vলোচনা করি যে, আসলে সময় বা দিন তারিখ তথা সময় নির্ধারক কোনটি, চাঁদ নাকি সূh©¨?
মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা তোমাকে নতুন চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেতুমি বলে দাও, তা মানুষের জন্য সময় নির্ধারক এবং হজের সময়েরও (তারিখ) নির্ধারক(সূরা বাকারাহ- 2:189
*3
রাসূল (সা.) বলেছেন, তোমরা রোজা রাখবে না, যে পhর্ন্ত না চাঁদ দেখতে পাওএকইভাবে তোমরা রোজা ভঙ্গ (ঈদ) করবে না, যে পhর্ন্ত না শাওয়ালের চাঁদ দেখতে পাওতবে যদি মেঘের কারণে তা তোমাদের কাছে গোপন থাকে, তবে শাবান মাস পূর্ণ করবে ত্রিশ দিনেঅপর বর্ণনায় আছে, তিনি (সা.) বলেন, মাস কখনও ঊনত্রিশ দিনেও হয়।(সূত্র : সহিহ বুখারি-৩য় খন্ড, ১৭৮৫-১৭৯০, সহিহ মুসলিম-৩য় খন্ড, ২৩৬৭-২৩৯৪)
হযরত আদম থেকে অদ্যাবধি এ পৃথিবীতে আল্লাহর সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ বসবাস করছেএতো বিশাল সময়ে কালের প্রবাহে মানুষ তাদের প্রয়োজনে সময়, দিন, তারিখ, জোয়ার-ভাটার হিসাব করেছেকখনো সূ‡h©¨, কখনো চাঁদের হিসাব করেছে এতে মানব সভ্যতার তেমন কোন সমস্যা হয়নিকেন হয়নি? কারণ মানুষকে গাইড করেছেন স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন
১৫ শতাধিক বছর পhর্ন্ত মুসলমানগণ চাঁদের হিসাবে বার গুনেছে এবং সেই অনুযায়ী বিভিন্ন দ্বীনি কার্ক্রম পরিচালনা করেছেনতাতে সূ‡h©¨র হিসাবে বার গণনা করেননিমনে করুন, আজকে রবিবারআজ রাত আসার সাথে সাথেই মুসলিম মনীষীগণ একে সোমবার বলেছেনকিন্তু সূ‡h©¨র হিসাবে আমরা রাত ১২টা থেকে বার গণনা করে থাকিসেজন্য চাঁদের বার এবং সূ‡h©¨র বার এক নয়ধরুন, মরক্কোতে রাত আসার সাথে সাথে মাসের প্রথম চন্দ্র দেখা গেলতার মানে সেই রাত থেকেই নতুন মাস গণনা করা শুরু হয়ে গেছে, ঠিক তেমনি ভারতেও যদি চাঁদ দেখা যায় তাহলে সেখানেও প্রথম দিন গণনা শুরু হয়ে গিয়েছে
এবার ধরুন, সেই নতুন মাসটি রমজানতাহলে ভারতের রাত হলো রমজান মাস, ঠিক তেমনি মরক্কোর মাস হলো রমজান মাস, কিন্তু সূ‡h©¨র হিসাবে তা একই দিন নয় এমনকি এদের মধ্যে সূ‡h©¨র হিসাবে ০ দিন কিংবা ১ দিন কিংবা ২ দিনের মতো পার্থক্যও হতে পারেকিন্তু চাঁদের হিসেবে কোন পার্থক্য নেই
একই দিনে রোজাশুধু ভিন্ন দেশে নয়; এক দেশের ভেতরেই সমস্যা ঘটাতে পারেযেমন- বাংলাদেশের চট্টগ্রামে সেহরির ৫ মিনিট পূ‡e© খবর এলো, আমেরিকায় চাঁদ উঠেছেএমতাবস্থায় চট্টগ্রামবাসী কোনোক্রমে হয়তো সেহরি সম্পন্ন করল, কিন্তু রাজশাহীবাসী যাদের ব্যবধান চট্টগ্রাম থেকে ১৩ মিনিট তারা কী করবে? একই দেশে অবস্থান করেও তারা রোযা রাখতে পারবে না
তাই স্ট্যান্ডার্ড টাইম জোনকে সামনে রেখে পৃথিবীকে যে অঞ্চল ভিত্তিক ভাগ করা হয়েছে, সেই হিসেবকে সামনে রেখে স্থানীয় চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে রোজা এবং আরবি তারিখ গণনা করাটাই যুক্তিযুক্ত
চাঁদের সময় গণনা সম্পর্কে ইসলামের কতিপয় দলিলÑহাদিস শরীফে এসেছে, ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা চাঁদ দেখে সিয়াম পালন কর এবং চাঁদ দেখে ঈদ উদযাপন করযদি চাঁদ অদৃশ্যমান থাকে তবে ৩০ দিন পূর্ণ কর
আনাস ইবনু মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাহাবী আমার কতিপয় আনসার পিতৃব্য আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, একবার শাওয়ালের নতুন চাঁদ (ঈদের চাঁদ) আমাদের নিকট অদৃশ্য থাকেআমরা পরের দিন অর্থাৎ ঈদের দিন সিয়াম পালন করিএমতাবস্থায়, ঐ দিনের (ঈদের দিনের) শেষভাগে একটি কাফেলা নবী (সা.)-এর কাছে এসে বিগতকাল চাঁদ দেখার সাক্ষ্য প্রদান করেনতখন রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের সিয়াম ভাঙতে নির্দেশ দিলেন
(আবু দাউদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদ, হাদিস নং-১১৫৭, ২৩৩২/ হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী, হাদিস নং-১১৫৭, ২৩৩৯, ইবনে মাজাহ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত ১৬৫৩)
অতএব বাংলাদেশে যারা সৌদিআরবের সাথে মিল রেখে সিয়াম পালন করে আর  ঈদ উদযাপন করেন? তাঁরা কি উপরে উল্লিলিখিত কোরআনের আয়াত এবং হাদীস কে মানেন বা বিশ্বাস করেন? ৩.৩০ ব্যাবধানে সৌদিআরবের সাথে আমাদের সূর্য্য উদয় হয়? তা হলে এটি কি ভাবে একই দিনে তাাঁদের সাথে সিয়ম পালন করা যায়? এমতে যারা আছেন তাঁরা আছেন কোরআন-হাদীস পরিপন্থি কারী, বিভ্রান্তকারী, ধর্মের মধ্যে ফিত্না-ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী? পবিত্র আল-কোরআন এদেরকে বলেছেন,সুরা বাকারা ২:১৯১ আয়াতে বলেন,

         ফেৎনা ফ্যাসাদ যুদ্ধ হত্যার চেয়ে কঠিন  

                                                                                                    

সুরা আল-মোনাফিকুনের ৬৩:১-৪ আয়াতে এদের সন্ধে বর্ননা করেছেন। এবং এদের থেকে সাবধান থাকতে বলেছেন আর ইলামের দুশমন বলে অভিহিত করেছেন?

৬৩:২। ওদের কওমকে ঢালরূপে ব্যবহার করে এভাবে ওরা নিবৃত্ত করে, মানুষকে আল্লাহর পথ হইতে; ওদের কর্মকান্ড নিত্যান্ত জঘন্য।

৬৩:৩। তা এজন্যে যে, ঈমান আনার পর কুফরী করিয়াছে, তাই মোহর করা হইয়াছে ওদের অন্তরে, ফলে ওরা বুঝেনা।




৬৩:৪। ওদিগের প্রতি তাকাইলে ওদের অবয়ব তোমার সুন্দর মনে; আর ওরা কথা বলিলে ওদের সাগ্রহে শোন, যদিও ওরা প্রাচিরে ঠেকানো কাঁঠের বেøাক এর মত(কাঁঠেরটুকরা) যে কোন উচ্চবাচ্য (শোরগোল) শুনিলে ওরা ভাবে ওদের বিরুদ্ধে (বলা হইয়াছে), ওরাই (শত্রæ) দুশমন, (সাবধান থাক) ওদিগে বর্জন কর; আল্লাহ ওদিগে বিনাশ (অভিষাপ দিচ্ছে) করুক কোথায় যাচ্ছে ওরা?

অতএব সত্যিকার দ্বীনদার মূসলন ভাই-বোনদেরকে অনুরোধ করছি, কখনও তাঁদেরকে অনুস্বরন করবেন না? কোন ফিত্না-ফ্যাসাদের সাথে জড়িয়ে ঈমান হারা হবেন না? আল্লাহ আমাদের কে বুঝদেল দান করুন। আমীন।

Copyright @ 2013-15 উম্মাতে মুহম্মাদ - আদর্শে ফুরকান.