জুলুম ও নিরয্যাকরা কবিরা গুনাহ
সৈয়দ আমজাদ হোসেন : ইসলামে মজলুমের হক আদায়ের বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কেয়ামতের দিন মজলুমের হক আদায় না করে জালিম ব্যক্তি এক কদমও
সামনে যেতে
পারবে না। সাধারণত সমাজে ধনীরা গরিবের ওপর,
মালিকরা
শ্রমিকের ওপর, শক্তিশালীরা দুর্বলের ওপর, ঊর্ধ্বতনরা অধীনস্তদের ওপর জুলুম
করে থাকে।
অত্যাচারী হামান, কারূন, নমরূদ, ফেরাউন,
আবু
জেহেল, আবু
লাহাব ও এয়াজিদ দুনিয়াতে বেঁচে নেই। তবে তাদের
আদর্শবাহী শাসক ও প্রভাব প্রতিপত্তিশালীদের অনেককে আজও দেখা যায়। পৃথিবীর সর্বত্রই শক্তিশালীদের হাতে দুর্বলদের নির্যাতিত
হওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটছে। সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের পাশাপাশি বয়স্ক,
গর্ভবতী
নারী ও শিশুরাও কেউ জুলুম নির্যাতন থেকে রেহাই পাচ্ছে না। অসহায়
এতিম
দুর্বলের ওপর অত্যাচারের কারণে আল্লাহ তায়ালা অতীতে বহু অত্যাচারী শাসক ও জাতি
গোষ্ঠীকে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এসব
অত্যাচারী শাসক ও ব্যক্তিবর্গ কেয়ামত পর্যন্ত ঘৃণিত হতে থাকবে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, (সূরা ইউনুস :
10:13|
‡Zvg‡`i Av‡M Avwg A‡bK KIg‡K wbig~j
K‡iwQ, hLb Zviv Ryjyg evwR‡Z †g‡Z D‡VwQj| Avi Zv‡`i Kv‡Q my¯úó wb`k©b wb‡q
Zv‡`i ivQzjMb G‡mwQ‡jb| wKš‘ Zviv Z Ggb
wQj bv †h Cgvb Avb‡e| Gfv‡eB Z Avwg
Acivax KIg‡K cvwikªwgK w`‡q _vwK|
মজলুম ব্যক্তির ফরিয়াদ আল্লাহ কবুল করেন। এ ছাড়া কারো প্রতি জুলুম করা হাদিসের পরিভাষায় কবিরা গুনাহ। হজরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল
(স.) এরশাদ করেছেন, তুমি মজলুমের ফরিয়াদকে ভয় করবে। কেননা
তার ফরিয়াদের
মাঝে এবং আল্লাহর মাঝে কোনো পর্দা থাকে না। (সহীহ বুখারি,
হাদিস
নং
২২৮৬)। আল্লাহ তায়ালা জুলুমকারীকে ভালোবাসেন না। তাই
জুলুমকারীকে পরকালে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। এরশাদ
হয়েছে, আর
তুমি তাদের সতর্ক করে দাও সেদিন সম্পর্কে যেদিন তাদের ওপর আজাব নেমে আসবে। অতঃপর যারা জুলুম করেছে তারা বলবে, হে আমাদের রব,
তুমি
আমাদের কিছু সময়ের জন্য অবকাশ দাও, আমরা তোমার ডাকে সাড়া দেব এবং
রাসূলদের অনুসরণ করব। (সূরা ইবরাহিম: ৪৪)
14:44|
Avcwb gvbe mgvR‡K †mB w`bwU m¤ú‡K© mZK© K‡i w`b †hw`b Zv‡`i Kv‡Q Avhve
Avm‡e|ZLb Zviv ej‡e,hviv RyjygevRx‡Z †g‡Z i‡qwQj:†n Avgv‡`i cvjbKZ©v! Avgv‡`i
AviI GKUz AeKvk w`b| †hb Avgiv Avcbvi Wv‡K mvov w`‡Z cvwi| †Zvgiv wK Gi Av‡M
Kmg †L‡q ej‡Z bv †h †Zvgv‡`i Rb¨ cZb †bB?
হজরত সাঈদ ইবনে যায়েদ (রা) বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল
(স) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি জুলুম করে কারো যে পরিমাণ জমি অন্যায়ভাবে দখল করে
নেয়, কেয়ামত
দিবসে
এর সাত গুণ জমি তার গলায় বেড়ি বানিয়ে দেয়া হবে। (সহীহ
বুখারি ও মুসলিম,
হাদিস
নং-২২৯১)।অতীতে যে বা যারাই দুর্বল ও এতিমের
সম্পত্তি গ্রাস করেছে, রাতের অন্ধকারে বিষ প্রয়োগ করে পুকুরের মাছ মেরেছে, জোরপূর্বক
উঠিয়ে নিয়ে
কোনো নারীকে গণধর্ষণ করেছে ও বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে হামলা চালিয়েছে, তাদের কারোই
অস্তিত্ব নেই।এরশাদ হয়েছে, যে পথে লোক
চলাচল করে তার পাশে লুতের সম্প্রদায়ের ধ্বংসস্তূপ এখনো বিদ্যমান। এর মধ্যে তো বিশ্বাসীদের জন্য নিদর্শন রয়েছে। (সূরা হিজর: ১৫)
আরো এরশাদ হয়েছে, আর আমি আদ ও সামুদকে ধ্বংস করেছি। তাদের বাড়ি-ঘরই তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট প্রমাণ। শয়তান তাদের কাজকে তাদের সামনে আকর্ষণীয়
করে
রেখেছিল। অথচ তারা নিদারুণ বিচক্ষণ ছিল। কারূন, ফেরাউন এবং হামানকেও ধ্বংস করেছি। (সূরা
আনকাবুত :৩৮,৩৯)।
29:38| Av` I Qvgy`M‡Y webvk KwiqvwQjvg,I‡`i AvRveB Zvi D¾j cÖgvY,
kqZvb I‡`i K‡g© †mvfb KwiqvwQj mrc_ avi‡b evav mvwaqvwQj, hw`I Iiv wQj weP¶Y|
29:39| aŸs KwiqvwQ Kviƒb, †divDb, nvgvb‡K, g~mv Zvw`‡Mi wbKU ¯úó
AvqvZmn AvwmqvwQj, Zviv ZLb `¤¢ KwiqvwQj c„w_ex‡Z wKš‘ Iiv Avgvi kvw¯Í GovB‡Z
cv‡i bvB|
জুলুমকারী ব্যক্তিরা ইসলামের পরিভাষায় সীমালঙ্ঘনকারী। সীমালঙ্ঘনের অপরাধে আল্লাহ ফেরাউনকে নীল নদের পানিতে
ডুবিয়ে মেরেছেন। এরশাদ হয়েছে, অতঃপর তাদের
সবাইকেই আমি (তাদের) নিজ নিজ পাপের কারণে পাকড়াও করেছি, তাদের কারো ওপর প্রচণ্ড ঝড়
পাঠিয়েছি, কাউকে মহাগর্জন এসে আঘাত হেনেছে, কাউকে আমি যমীনের নিচে গেড়ে দিয়েছি, আবার
কাউকে আমি (পানিতে) ডুবিয়ে দিয়েছি’। (সূরা
আনকাবূত 29:40| Aciva‡nZz kvw¯Í w`qvwQjvg cÖ‡Z¨K‡KB I‡`i Kv‡iv
cÖwZ cvVvBwQ cÖAšÍimn cÖPÛ evqy; KvD‡K AvNvZ KwiqvwQj fxlb eR©ªaŸwb, KvD‡K
‡cÖvw_Z KwiqvwQjv gvwU M‡f©, KvD‡K KwiqvwQjvg wbgw¾Z, Avjøvn KvDi Dci Ryjyg K‡i
bv eis Zviv wb‡Riv wb‡Ri Dci Ryjyg K‡i|
হজরত আলী (রা) হতে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল
(স) এরশাদ করেছেন, তুমি মজলুম বা অত্যাচারিত ব্যক্তির বদদোয়া হতে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখ। কেননা সে আল্লাহর দরবারে তার হক লাভের জন্য প্রার্থনা করে। (মেশকাত শরিফ, হাদিস নং ৪৯০৭)। হজরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল
(সা) এরশাদ করেছেন,
যে
ব্যক্তি তার কোনো মুসলমান ভ্রাতার প্রতি তার মানসন্মান বা অন্য কোনো বিষয়ের
ব্যাপারে জুলুম করে তবে সে যেন তার নিকট হতে সেদিন আসার পূর্বে আজই মাফ
করিয়ে নেয়। যেদিন তার নিকট দেরহাম ও দীনার
কিছুই থাকবে না। সেদিন তার নিকট যদি কোনো আমল থাকে,
তবে
তার জুলুম পরিমাণ নেকি নিয়ে নেয়া হবে। আর তার নিকট
নেকিও না থাকলে মজলুম ব্যক্তির গুনাহসমূহ তার ওপর চাপিয়ে দেয়া হবে। (মেশকাত শরিফ, হাদিস নং ৪৮৯৯)। আল্লাহ
আমাদের সকলকে জুলুম নির্যাতনের মতো কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার
তৌফিক
দান করুন। আমিন।