অামাদের সম্পর্কে জানতে নিচের লেখাটি পড়ুন

উম্মাতে মুহম্মাদ - আদর্শে ফুরকান

এটি ইসলামিক সংঘ, যার কাজ মানুষকে ধর্ম সম্পর্কে সচেতন করা এবং বিভিন্ন ধরনের সমাজ সংস্কারমূলক কাজ পরিচালনা করা । বর্তমানে এটি বরিশাল বিভাগের ...

ব্লগ থেকে

ইসলামে মুসলিম-অমুসলিম সম্পর্ক



ইসলামে মুসলিম-অমুসলিম সম্পর্ক


 
‰mq` AvgRv` †nv‡mb : কুরআন মাজীদের বিভিন্ন আয়াতে মুসলমানদেরকে অমুসলিমদের সাথে বন্ধুত্ব ও ভালবাসা স্থাপন করতে নিষেধ করা হয়েছেএ থেকে স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহ জাগতে পারে যে, ইসলাম তার অনুসারীদেরকে অন্য ধর্মাবলম্বীদের সাথে কোনরূপ সদাচারের অনুমতি দেয় নাইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থেই এ সন্দেহের নিরসন হওয়া প্রয়োজনবিশেষত সভ্যতার চরম উৎকর্ষের এ যুগে বিশ্ব মানব যখন একটি গ্লোবাল ফ্যামিলির রূপ ধারণ করেছে, যখন মনুষ্য সম্প্রদায় ও জাতিসমূহের আত্মনির্ভরতা অনস্বীকাh©¨vয়ে এসে দাঁড়িয়েছে, তখন এ ধরনের সন্দেহ মুসলিম জাতির জন্য নিতান্ত অকল্যাণকর বস্তুত অমুসলিমদের সাথে মুসলমানদের সম্পর্ক কি হবে, তা সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে কুরআন ও হাদীসে
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের আচরণ থেকে অমুসলিমদের সাথে সদ্ব্যবহার ও সদাচারের এমন ঘটনাবলী পাওয়া যায় যা অন্যান্য জাতি বা সম্প্রদায়ের ইতিহাসে একান্তই বিরলকুরআনের আয়াতসমূহের প্রতি গভীর মনোযোগ সহকারে পূর্ণাঙ্গ তথ্য অনুসন্ধান করলে এ সম্পর্কিত ভ্রান্তির নিরসন হতে পারেকুরআনের বিভিন্ন আয়াতে অমুসলিমদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করতে নিষেধ করা হয়েছে ঠিকইআবার অনেক আয়াতে তাদের সাথে সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছেসদ্ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছেবন্ধুত্ব, অনুগ্রহ, সদ্ব্যবহার ও সমবেদনা এ বিষয়গুলোর প্রত্যেকটির স্বরূপ বিশ্লেষণ করার পর কোন h©¨vয়ে ইসলামের কি নির্দেশ রয়েছে তা ব্যক্ত হলেই অন্য ধর্মের অনুসারীদের সাথে মুসলমানদের সম্পর্কের সীমা চিহ্নিত করা সহজ হবেমানুষের পারস্পরিক সম্পর্ককে কতিপয় স্তরে বিভক্ত করা যায়যথা : বন্ধুত্ব ও ভালবাসা, সমবেদনা, সৌজন্য ও আতিথেয়তা, সমঝোতা এবং লেনদেনের স্তরপ্রত্যেকটি স্তরের জন্যে ইসলামের বিভিন্ন নির্দেশ ও নীতিমালা রয়েছে
বন্ধুত্ব : অমুসলিম ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের সাথে মুসলমানদের বন্ধুত্ব বা ভালবাসার সম্পর্ক স্থাপিত হতে পারে নাকারণ ইসলামের দৃষ্টিতে পৃথিবীতে মানুষের আগমন হয়েছে একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখেইঅন্য প্রাণী, বৃক্ষ-লতা কিংবা জড়পদার্থের মত মানব জীবন ইহজগত সeর্স্ব নয়যে উদ্দেশ্যে ও লক্ষ্যকে সামনে রেখে মানুষকে এ জগতে পাঠানো হয়েছে, মানুষের সাweর্ক জীবনযাত্রা ও ক্রিয়াকলাপ তাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হতে হবেআল্লাহর ইবাদত তথা দাসত্ব ও আনুগত্য মানব জীবনের লক্ষ্যঅতএব, তাতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোন কাজ-কর্ম তার জন্যে অনুমোদিত নয়অমুসলিম ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের সাথে বন্ধুত্বের ফলে মুমিনের ইবাদতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিকএ কারণে কুরআন মজীদের বিভিন্ন আয়াতে মুসলমানদেরকে অমুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে বন্ধুত্ব ও ভালবাসার মত ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছেসামাজিক পh©¨vয়ের চেয়ে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পh©¨vয়ে অমুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে মুসলমানদের আন্তরিক সম্পর্ক অনেক কুফল বয়ে আনতে পারেঘনিষ্ঠতার সুবাদে মুসলমানদের অভ্যন্তরীণ বিষয় অবগত হয়ে তারা এমন পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ লাভ করবে যাতে মুসলমানদের সমূহ বিপদ ঘটতে পারেZ‡e সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পh©¨vয়ে এ বিষয়ে খুবই সতর্কতার প্রয়োজন হয়আধুনিক সভ্যতায় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলো পরস্পরে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করার ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ না করলেও এ সম্পর্কে কেউই একটি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করতে দেয়া নাউদ্দেশ্যে একটাইআর তা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও সাভৌমত্ব রক্ষা করা
সমবেদনা : সহানুভূতি প্রকাশ, হিত কামনা ও উপকার করার ক্ষেত্রে মুসলমান-অমুসলমানে কোন পার্থক্য নেইযাদের সাথে মুসলমানদের যুদ্ধাবস্থা বিরাজমান এমন অমুসলিম ব্যতীত সবার প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করা যায় অমুসলমানদের উপকার করার কোন বাধা তো নেইই বরং ইসলামী রাষ্ট্রে বসবাসরত অমুসলিম জনগণ এক্ষেত্রে মুসলমান নাগরিকের সমান হকদারমহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম নিজেদের জীবনে এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্তসমূহ রেখে গিয়েছেনজনৈক ইহুদী বালক মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসা-যাওয়া করতোএকদিন তিনি ছেলেটিকে দেখতে না পেয়ে তার খোঁজ নিলেনজানা গেল, ছেলেটি অসুস্থতিনি তৎক্ষণাত তার বাড়িতে গিয়ে তার সেবা-শুশ্রুষা করতে লাগলেনএক পh©¨vয়ে তিনি তাকে ইসলামের দাওয়াত দিলে ছেলেটি তার পিতামাতার সম্মতিক্রমে মুসলমান হয়ে যায়অমুসলিম নাগরিকের সেবা করার এমন প্রচুর ঘটনা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের জীবনে A‡bK দেখা যায়
মক্কায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে সাহায্য প্রেরণ করেনঅথচ এরাই অমানুষিক অত্যাচার ও নিপীড়ন করে মুসলমানদেরকে দেশত্যাগে বাধ্য করেছিলওমর রা. মুসলমানদের মত অমুসলিম দরিদ্রদেরকেও বায়তুল মাল থেকে সহযোগিতা প্রদান করতেনকুরআন মজীদে মুসলমানদের প্রতি এরূপই নির্দেশ রয়েছেআল্লাহ তাআলা বলেন, যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের সাথে যুদ্ধরত নয় এবং মাতৃভূমি থেকে তোমাদের বহিষ্কার করেনি তাদের সাথে দয়া ও ন্যায়বিচারের ব্যবহার করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেন না (মুমতাহিনা:৮) ন্যায়বিচার ও সদ্ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইসলামি রাষ্ট্রে বসবাসরত অমুসলিম, চুক্তিতে আবদ্ধ অমুসলিম এবং শত্রু অমুসলিম সবাই সমান
সৌজন্য ও আতিথেয়তা : বাহ্যিক সদাচার ও সৌজন্যের ক্ষেত্রে অমুসলিমদের কোন শ্রেণীবিভেদ নেইএমনকি যুদ্ধরত অমুসলিমরাও সৌজন্যমূলক ব্যবহার পাওয়ার যোগ্যকাফেররা আত্মীয় হলেও তাদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করা যাবে না, নির্দেশ নাযিল হবার পর সাহাবায়ে কেরাম এই নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে বাস্তবায়িত করেনএরফলে ঘরে ঘরে পিতা পুত্রের সাথে এবং পুত্র পিতার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করেছেযদিও মানব প্রকৃতি ও সহজাত প্রবণতার জন্যে এরূপ করা সহজ ছিল না কিন্তু সাহাবায়ে কেরাম আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসূলের নির্দেশাবলী পালনের ব্যাপারে নিজেদের প্রবৃত্তি ও পারস্পরিক সম্পর্কের পরওয়া করতেন নাতাই আল্লাহ তাআলা তাদেরকে এ ব্যাপারে একটি মূলনীতি জানিয়ে দেনবন্ধুত্ব ও আন্তরিকতা করতে নিষেধ নেই

Copyright @ 2013-15 উম্মাতে মুহম্মাদ - আদর্শে ফুরকান.